বাক্‌ ১১৫ ।। চটি এমন প্রবল যে দাঁড়াবার ইচ্ছেটাও দাঁড়িয়ে যাচ্ছে ।। রত্নদীপা দে ঘোষ

চল্লিশ। ফুঁড়ে উঠছে রেডিয়ামের হাতঘড়ি। চমকে তাকানো সময়ের দিকে। সময়ের রিং।রিঙের রিঙটোন বেয়ে ব্যক্তিগত। সোজাসুজির প্রেক্ষিত। পঁয়তাল্লিশে পৌঁছে টের পাওা গেল অবশেষের আকর্ষ- যাই-যাই হয়েও অর্গানটি আসলেই প্রকৃত জীবনানন্দ।

আর হাতের মুঠোয় ধরে রাখা বহমান কাব্যসংগ্রহটি আসলে সুরঞ্জনা আর বনলতার হার-হারনেস -সংস্করণ।

সত্যি বলছি মশাই ... বিশ্বাস করুন ...বাইশ তেইশ এমন তেত্রিশেও টেরটি পাইনি তেমন কোরে... অই যাকে বলে পাতিবাংলায় ... যৌবনের জ্বালা। কুটকুটুনির টুনটুনি পাখিটি।এখন হরদম। যখন তখন। রেজিমেন্টের আংরাখাটি। তেলকালি আর বারুদের বোল্ডার বাজিয়ে দিয়ে ...

আতসবাজির আশনাইমুখ খুলে। কুমকুমে ছনছন চটিরসের ভিয়ান।

অট্টালিকায় সামান্য একটি ফুঁ। ব্যাস। আর অমনি আমার শারীরিক সাম্রাজ্য ... বেড়েই চলেছে ... বেড়েই ... সব সময় একটা চাই-চাই ... খাই-খাই  ভাব ... কাতর উঠছে ভদ্রাসনের ওয়াগন। জমিজমা ... তৈজস। হস্তমৈথুনের রঙচঙ্গে গ্লোব ডিঙিয়ে। ফ্যানাভোজীকে যত্রতত্র চেপে ধরতে মন চাইছে খুব।

চটি এক প্রকার সাহিত্যই। পড়ে সবাই। পরার পরেই দাঁড়ায়। ওঠে। আমি নিজে অবশ্য দাঁড়াইনে। আমারটা বরং উঠে বসছে। চোখ মেলছে। লেমনগ্রাসের পাপড়ি, তুরীয়ফুলে বেভুল বিদ্যুৎ। নখ্রাবাজিতে সে বড়ো ভয়াবহ তামাক। নিকোটিনের হিং টিং।

অনিবার্য যে ছট আমাকে সুড়ঙ্গের গভীরে।  পৌঁছে দিতে পারছে তার রেকি-স্পাইন। তার বোধিদণ্ডের তিন পিঠ। তরঙ্গ। ঢেউবিহীন ঢেউপালস। পালসই খুঁজে পাওয়া যায়না। সেদিকে তখন প্রায় মৃত্যু। ওদিকে তখন আগুন। আগুনের পিচরাস্তা। মনে হয় আমি যেন শ্রেষ্ঠ খানকি। মাগি বাজাচ্ছি। মাগি বাজাচ্ছি লাগাতার। হ্যালুসিনেটেড সাজঘর। সাজ মুছে ফেলছি সভ্যতার। মাস্কাকার টোলা, কলোসেলের খালাসি। পৃথিবীর প্রথম বেশ্যা। রণিত কাজলে টানছি পুরুষ। পুরুষ। কালো-লাল। সাদাটে-লাল। পাঁশুটে বাল। আহা ... পুরুষ। তুমি কেন দাঁড়াচ্ছ না ... কেন যে তোমারটা দাঁড়াচ্ছে না।

দরজা খোলো। খুলে দাও আন্ডারটাউন। ওয়্যারের ভেন্টিলেটার। সাহিত্যবদ্ধ শিশুটির ঠোঁটে একবার ঠোঁট রাখি। দাও আমাকে। আমার মুখে তুলে দাও তোমার সেক্সপিয়ার। যার প্রতিটি মাইলো শিরাউপশিরার নাট্যজ মিটার।

অ্যাডভেঞ্চারের রেনেসাঁ ভারি পরীক্ষামুলক , মশাই।

সো। নো। ধানাই অ্যান্ড পানাই।

ব্রেখট বুলিয়ে চিনে নেওয়া যাক বিদ্যাসুন্দর শীত-কার।

এইতো ... এইতো ক্রমশ বড় হচ্ছে ইতিহাসখচিত সেনলক্ষণ। এই যে ধীরে ধীরে লম্বা হচ্ছে কার্মাটার। পেল্লাই বোহেমিয়ান। ভাগবতের বিদগ্ধ ভাটিয়াল। এখন খিঁচছি নিজের হাতে।

আসছে তোমার ?   

পুরুষের ঐশ্বর্য কি মনে ? না না। একদম নয়। পুরুষের আদ্দেক ঐশ্বর্য তো এইখানে। চন্দ্রবোড়া আর খরিস ... মিলেমিশে একাকার যেখানে। অজগর। আর দেরি কেন হে ? ছোবল খেতে প্রস্তুত। ভিনিগারবাতাস আর লেবুকণার নূর .. আজ এত পেছল যে।

আজ যে আমি মাসিক ... রক্তে রক্তে আছি ... আর প্রবাহের বাঁকবদলে জেগে উঠছে আমার যৌনলিপ্সা... হাশিশগাছের থেকেও আজ আমি নয়নলোভনা... এই দ্যাখো ... কেমন ভয়াবহ রক্তাক্ত আমার গর্তগোখরো। ফিনকি ছড়াচ্ছে বহমান শরত-বঙ্কিম। ব্রাহ্মগাঙের সঙ্গীতরবি চমকাচ্ছে ... আমার ভেতরে না এলে তুমি যে জানতেও পারবে না ... মাদকের কল কেমন সেলাই জ্বলছে তার ডানাদৃশ্য।

জিভ দেবে ? না আজ জিভ দিও না ... এ বড় দূষিত ক্লেদ ... আজ মুখে করো না।

লোকে যে তোমাকে রক্তখেকো পুরুষ বলবে ... বরং আঙ্গুল রাখো। আঙ্গুলকে আমার রক্তের স্রোতে একটু কোরাস নাচাও। আহা ... অত জোরে নয় ... ধীরে ধীরে ... পতঙ্গ সমীপে ... উইঢিবির তরণী ... তরোয়ালের লু ...এই সময় নারী সুফলা দোয়াত। ঘোর দূর্বাদল। এই সময় নারী সাঙ্ঘাতিক বিভাময়।  আভার খাপে মোড়া দেবীপুজা... ছিন্নমস্তায় উস্কে ওঠা চর... নুনের আশায় সরু-মোটা পরিণামের শোণিত...

হীরাদলে ফুটো ফুটো। শৃঙ্খলের থুতনি।  ঘনিয়ে আসুক হাল্কারোম। ভারি তাগদের হোম। তুমি বরং প্লাবনের নখগুলি ছাঁটো। ছোটো করে দাও। ল্যাব্রাডরের উড়ন। তুবড়ি কিন্তু প্রকৃত ভালবাসা নয়। তুমি পুং। কীর্তিনাশা বুল। জাপটে ধরো এলাটিং বেলাটিং ... তোমার ধনটি হোক সেনাবাহিনী প্রধান ... আমি প্রবল আমিষ। নিরামিষ যামিনীর রশ্মি ছিঁড়ছি ...এখন ধিকিধিকির টিলা ... আজ আমি পাথুরে-সজল রজঃস্বলা। পেট হবে নাকো আজ। ডিম্বাণুরা আজ প্রবল মাতৃহারা।

তুমি আজ কনডোম পোরো না তো। এমনি থাকো। শুধু থাকো। এমনি-এমনি ঢোকাও।

নীপবনে ঢেলে দাও দোলনার রুকস্যাক। অণু পরমাণু শুক্রাণু। তাবৎ শুক্রগ্রহ এধার ওধার। প্রতিবার আঁধারের পরে নাকি। সূর্য ওঠে কামুক। চালাচালির বয়ায় নামে ঢল।দাঙ্গার ফাঁস ... আশাতীত টানেল বেয়ে যে ডার্কনেস ... তার কানামাছিতে ভোঁ ভোঁ তীরছুকড়ির অ্যামবুশ।

ডগস্টাইল নাকি গডস্টাইল ?

অথবা শুধুই সিরিঞ্জদানির আগায় ডগায় ইঞ্জেকশনের লেক ...জানো তুমি ? সেইসব কার্তুজটাউনে। আমার কমপক্ষে আট-দশখানা পুরুষডুবি আছে ? ...তবে নিশ্চিন্ত থাকো। আজ এই মুহূর্তে তুমি। শুধু।  

আহ!আরাম ... আরাম ... আরামের অপরূপ। ছুটকো উদোম। ছাটকা উদ্যম। দুটোই মিলে গেলে উচ্চকিত গিনি ... গিনিসোনার ... পিগ ... তামাম ভিস্যুয়াল আর ইমেজ ... রিমেকের সাউন্ড... মাসিকের দিনগুলিতে আরও পবিত্র লাগে নিজেকে ... সূর্যমণি আর বেতাব বাদশার আলিশান সিন্ক্রোনাইজেশন হয় আমার শরীরে ... যেন এই প্রথম ...

বৌদ্ধপৃথিবীতে এই প্রথম গদাধর আর সারদার বিবাহ-বিহার ... উথলে উঠছে শয্যা। এই প্রথম ফুলছাপ-হরিণী-সংসার ... ভবতারিণীর এক একটি ঘাই-ঘাঘরাই আজ চরম প্রতিমা। রতিরসের এমন সঞ্চার আমার ... মাসের অন্যদিনগুলিতে এমন কথামৃত হয় নাকো ...

পূর্ণ বরফ। ব্রেসিয়ার কাটা গ্লেসিয়ার। গুঁড়িয়ে।

বোঁটার ভুরুতে মৃদুশুদ্ধ উচ্চারণ ... শিরশিরিয়ে দুধপ্রবাহের গর্বানাচ... মাইলস্টোনের তামাম ... প্রান্তরাত্রির জাজিম... তুলতুলে অন্দরমহল কাচের সারান্দা স্ফুলিংগ ... নিরাবরণ কনীনিকা ...

বিছানাজিভে নিজেকে সঁপে দিতে দিতে গরম বাসনার গা-গঞ্জ এমনকি জং-ধরা কলকাতার কবিসমাজও আজ গরম হয়ে উঠছে গো...

ওকি ? কান্নার স্বরে কথা বলছো কেন ? কিস্তি মাত হবার পরে কান্নাই বা কেন ?কিসের ? ফালা-ফালা পাপ ? না। মশাই। এ পাপ নয়।

বয়াম ভিজে গিয়েছে এমন এমবস করা অর্গাজম ...

জল খসছে। খসাজলের বিপুল খাদান  ... আঁচড়ে দিচ্ছি কাঁধ পিঠ ... শক্ত টেরাইন খসে যাচ্ছে আমার আহ্লাদী মাটির চিনিতে , মৃৎপিণ্ড ... কচ্ছপবাক্সের সাদা খোলসে  ... অল্পকাল্পনিক দেরাজের জঙ্গলে ... একটু একটু ফুটে উঠছে গোঙানি ...

আমি ভেবেছি , আনন্দে কাঁদছ তুমি। আদতে কিন্তু টুপ করে খসছে চাবুকের গরম। নরম জোয়ার ... নাতিদীর্ঘ।  উদ্দাম পরচুলোহীন। পুরন্ত বিতোফেনে ফ্যাদানো উদ্যান।

নিজেকে লুকোনোর মত আর কোন বাগান নেই। এই মুহূর্তে দুজনের। নিজেকে কেনার মত আর একটিও মুদ্রা নেই ... কয়েন ? আর আছে কী তোমার কাছে? সাপের শিষে মোড়ানো শব্দের লালা? তোমাকে চেটে খেতে ? তোমার ঘাম খেতে এত আনন্দ আসে কেন?

আমার বুকে তোমার মাথা আমি চেপে রাখি কেন? আমার স্বপ্নে এত রকমারি বেশে তুমি আসাআসি করো কেন? আমার ওপরে তুমি , তোমার ওপরেও আমি ... আমাদের দু জনের মাঝে এতো বাহাদুরির দীর্ঘকাল। পৃথিবী-আকাশ... টিউনিক ওপড়ানো ... স্বপ্নগুলি ... কেন হেঁকে ওঠে হুড্রুপ্রপাত ... কেন এমন হ্যারিকেন চোঁয়ানো ... লণ্ঠনকেমো আমাদের তাপ দিতে থাকে ... স্বপ্নের মধ্যে জেগে উঠি ... জামাকাপড় খুলি একে অন্যের...  নগ্ন হই ... কেন চিড়বিড় করে সুতির দাঁত।

দাঁতের ফিটার ... কেন পরাশর বাজায় দ্রিদিম ঘোড়ার ফিভার... কেন ছুটতে শুরু করি ... পরস্পরের দাপাদাপিতে লহমার লিয়াজোঁ.. আমার দুধেবাঁট ... তোমার টানাটানিতে ... যৌন হয় ... আরও ছানাপোনা সহকারে যৌন হয় ... কেন স্বপ্নের মধ্যে খিদে পায় ... তেষ্টা হয় আমাদের পিরিচভরা বিলিভ-মি... কেন এক বালতি টিপকল ডিপকল... ব্ল্যাকহোলের ভেতরে কয়েক হাজার টানটান হাতে-টানা মাল্টিজিম...

ক্লিটোরিসের টকটকে পেরিয়ে। যে সাহিত্য পেনিসের মতো ঝকঝকে। যে দূরত্ব  আলখাল্লার মত কাছাকাছি। যে নৈকট্য আতরের মত সন্দিহান। অশুচি হবার ভয় জয় করে যে সাহিত্যকে আমি ঢুকিয়ে নিয়েছি তাতানো শিক আর বেলেল্লার সোয়েটারে ... তাকে সম্পূর্ণ পরালেখার পরে আসছে যে অসম্ভব ঘুম ... হাড়কাটা ঘরের ঘুম ... ঘুমঘুমিয়ে আসছে .. রমরমানো আদরের মালসা । যৌনচেকপোষ্ট খুলে দিচ্ছে মায়াবী ট্র্যাফিকজ্যামের ওম। হাইরাইজে জট পাকানো। লিংগমাথা।

আমার মাসিকে-রক্তে মিশে থাকছে প্রচ্ছদের বিস্ফোরণ ... সাহিত্যের ব্লাইন্ডলেনগুলি কেঁপে উঠছে। দুটি পা ফাঁক করে। সাবমেরিনের তলায় নিজেকে বিছিয়ে। এখন লিখছি তারই টং ...

                                                          (চিত্রঋণ : Suzuki Harunobu)