বাক্‌ ১১৫ ।। শামস রুবেল




হন্তারক

আমি যা দেখি কেউ তা দেখ?
দেখি, পোড় খাওয়া হরিণ
অপভ্রংসসমূহ জাগতিক...
একটি হাংরি বাঘ, ছুঁতে-ছুঁতে তাকে, ছায়াই খাচ্ছে
বাঘের পেছনে অন্ধক্যাপ্টেন;
দূরবীনে ফেলে কোনো অনুচর তাকেও মাপযোগ করছে!
দেখ, কি করে জানি সেই অনুচরের পশ্চাতে পড়েছি আমি

আমার পেছনেই কি আছো, শালা তুমি?

 


ডেথ

"I see death hover over the generous taking the
hoarded treasure's of their most unrelenting"

তোমার মুখের উপর জানালা লাগিয়ে আমি দরজা দিতে
ভুলে গেছিমৃত্যু!

পায়ের কাছে লুটিয়ে আছে স্বর্ণ-শিরোস্তান, ম্লান মুখ,
আমিও পছন্দ করি ফলের স্বাদ; আমার উদ্যানে কেন
আমাকেই রুখে দাও তুমি!

গালিচা যেখানে শেষ, পথে পড়ে থাকে বালি
মুখে যার মাকড়সা-জালসে-ই তো পাড়ি দেয় মৃত্যুর গুহা
এভাবেই, আমি জানি; মানুষ একদিন অমরত্ব পাবে
যেহেতু চলতেই থাকে মৃত্যুর সাথে লড়াই!

আর আজ যে পরাস্ত হলো বেভুল মেয়ে, তার বাবা বলেছে,
'মৃত্যু লম্পট পুরুষ'
অস্ত্রের মুখে যে আমার কাছে একদা চেয়েছিল জল;
তার পিছে সে ফেরারি-খুনী

মৃত্যু লম্পট পুরুষ, ভৃত্যও, তবে আবির্ভূত হয় নারী রুপে!



পঠন 

জুতোজোড়া জানে, কেথায়-কোথায় সারাদিন
বয়ে নিয়ে গেছে!

কেবল আমি-ই জানি, আগামীকাল কখন কোথায় যাবো

যে আমাকে জানে, বাকিটুকুন সে জ্ঞাতকোথায়-কোথায় থাকবে!




তেমন কিছু ৯

মাছ পোষার সখএদিকে পুষে রেখেছি সৌখিন বেড়ালও!

অপরিহার্য ব্যাপার, অ্যাকুরিয়ামের পাশে চকচকে বেড়ালের
আত্মা, ঘোরেফিরে জীবন্ত বাহারি রঙের মাছ পরস্পর কাছে
পেয়েও অন্ধ!

কথা বোলে মাছেদের সাথে ভাগ্যিস এক মন খারাপের দিনে
একজনের নাম রেখেছিলাম "একটা" অন্যটার "দুইটা"

বেড়াল একটা খেলেও গুনে দেখেছি মাছ ছিল সেই দুইটা!




প্রাকপুরানিক


প্রতিদিন মরি ও বেঁচে-বেঁচে থাকিএকত্রে যায়?

উভয় ক্ষেত্রে ভেতরে একটা কবর
এখানে সারিবদ্ধ দেয়াল, স্থিরতা শুধু বাধা নয় ভরসাও দেয়!

যে পথে চলতে চাই হাঁটতে পারিনা
কিংবা যখন শুরু করি যায় না থামা;
এক অন্ধকার থেকে আরেক অন্ধকারে

তৃতীয় থেকে চতুর্থ গুহাবিবরে হই নস্যাৎ

ফুল ও পাখির ধর্মই বুঝি আমার অভিশাপ!

আর দরজার ওপারে কেউ বন্ধু নয়
কে জানে ভেতরেই বা চাপা পড়ে আছি কিংবা নাই
কার, ট্রলি, ময়লার ট্রাক,শুধু আমাকেই বা ঘিরে কেন দাঁড়ায়?

পার্ক, সড়ক, ফুটপাথে দেখা হয় তোমার সাথে রোজ
অন্তত দুর্ঘটনাবশত একদিন কেউ গাছকোমরে দাঁড়াক!



দ্য রেস্ট ইজ সাইলেন্স


ডানা গজালে বোঝা যায় আকাশ মিথ্যা!

দাঁড়িয়ে থেকে থেকে মানুষ হয় হরিৎ বৃক্ষ

কোথাও মোমের মতো গলে যাচ্ছে নিষিপষ্ট আঙুল;
তির্যক একসেট কন্ঠস্বর...

হাস্যবিস্ফারিত অন্ধকারে দুপাটি দাঁত খেয়ে নিচ্ছে চক্ষু!
জন্মই শ্লাঘনীয়ভুল ঘোড়ার উপর ধরে রাখা বাজি!

প্রতি রাতে আমি তাই আমুন্ডুপদনখ পাতালে নামি
দেখি, কতদূর ডুবে গেছে স্বপ্নবাহী চাঁদ...

নিদ্রাহীন প্রতিটি ক্ষণ ক্ষুব্ধ- মৃত্যু- ঢেউ
ইত্যবসরে তাই নির্জন পুকুরে ঢিল ছুঁড়ি;
তলিয়ে যাওয়া দেখতে হলে চাইমৃত্যুর অবসর!

                                                                   (চিত্রঋণ : Faisal Laibi Sahi's Martyrs)

No comments:

Post a Comment