বাক্‌ ১১৫ ।। অভিষেক ঘোষ




সেই সব পুরনো দার্শনিকগুলো, এখন জিনস পরে, ধ্যানবিন্দুর সামনে দাড়িয়ে থাকে

সব হেরে যাওয়া থিওরেমবিদ একদিন কবিতা লিখেছিল।
সব হেরে যাওয়া কবিতাবিদ থিওরেমকে যখন,
আমার স্বাধীনতার পাতায় এনে বলে,
কবিতা শেখ,
আমাকে বলতেই হয়
তুই আগে কবিতা লেখ। 

 

এদের অনেক নামই দেওয়া যায়

বাইরে আর মেঘ ছাড়া কিছু দেখার মত নেই,
জালে সূর্য বেঁধে কেউ,যেন ডুবিয়ে রেখেছে রোদ
তাকে তুলে আনবে বলে,জলে নেমেছে যত মাছ,
তারা মেঘলা হয়ে উঠে এসেছে, মিথ্যে বিবেকবোধ
চোখে চোখে তাদের চিকচিক করছে শ্যওলার দিন
ঠোঁটে ঠোঁটে তাদের উঁকি চিনেছে মৃত্যু ঘেরা যম
পাশে কোন ছাই নেই, যাতে মেঘ পড়লে জ্বলে ওঠে
আগুন,
পাশে কোনো হাত নেই যাকে ধরলে, নিজেরই পরিশ্রম
তার চেয়ে অনেক ভালো এই জলের উপর মুখ ফেলে
কাটানো সময় দেখতে দেখতে, আরও যেন কাটানো,
যেতে পারে, হাওয়া প্রাচীন,
কেউ থাকে না, থাকে না কেউ তা সবাই জানলেও,
বলতে থাকে, ছায়ার নীচে যখন আছি,
তখন ঠিক কেমন লাগে দমকা মনে,তখন ঠিক
কেমন করে মনে পড়ে ভালোগন্ধ,
রোদ উঠলে, সব শুকিয়ে যাবে মৃত্যু ভূমিকার কাঠ,
মেঘ না হলে,মনে পড়ে না যার কবিতা লেখার কথা,
গঁদের আঠা দিয়ে লাগানো,
ভাঙাচোরা দুটো ছন্দ।   
                                            


রাত হলে খুলো

সেই সব শেষ বেঞ্চির মতো গায়ে আঁক কাটা পেনসিলের দাগে আমি সরে যাচ্ছি।
এই ক্লাস থেকে ওই ক্লাস,কখনও অন্য স্কুলবাড়ি থেকে অন্য পাঠশালার ঠোঁটে মাছি
তাড়াচ্ছি আর মৃত রাত মৃত দিনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে,আমায় জীবন্ত করার ভুলে,
মৃত আলো মৃত অন্ধকারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে মস্তিষ্ক চূর্ণ করা বাক্যকৌশলে
এর চেয়েও অনেক বেশি সরে গেছে হাওয়ার মুখ, এদিকে সরে গেছে সমস্ত আশ্রয়
দয়া সরে গেছে, গয়া সরে গেছে, রাত বিড়েতে উঠে খাতায় খস খস শব্দ সরে গেছে
তাই বাক্য সরে গেছে,ভাবনা সরে গেছে,সরে গেছে অক্ষরের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা
বন্ধুর সাবেকি কুঁড়ে ঘর..
সেখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আমরা দুজনে আর কাঁদতে পারিনি, যারা বলি
আলাদা আলাদা
অক্ষর।
তাও নদীর সব সেরে উঠলে,অসুখ থেকে পায়রা ছুটে এলে, ট্রেনের জানলা দিয়ে
কমলা আকাশ পিছিয়ে চলে গেলে, আমি খুব কষ্ট করে ঘসে মেজে তৈরি করি
একটা আঁকা,
যা অন্ধকারে দেখা যায় ভাল।
আলোতে  গেলে ঝাপসা কুয়াশাট্রেনের মত,
লম্বা লম্বা গাছের ডালে,
দুমড়ে মুচড়ে, ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা...


                                       (চিত্রঋণ : Hsu Kai Ti)

13 comments:

  1. নিজেই দুমড়ে মুচড়ে দিলি তো সব থিওরেমগুলো

    ReplyDelete
  2. ।।অসাধারণ প্রতিটি কবিতা।।

    ReplyDelete
  3. ।।অসাধারণ প্রতিটি কবিতা।।

    ReplyDelete
  4. ভালো প্রথমটা লাগলো। তপেশ দাশগুপ্ত এর একটা একলাইনের কবিতা মনে পড়ে গেলো।
    "যারা আমাকে কবিতা লেখা শেখাতে চেয়েছিল তারা সুনন্দা কে দেখেনি"

    ReplyDelete
    Replies
    1. porer gulo. poro ni tumi. poro pore..........

      Delete
  5. This comment has been removed by the author.

    ReplyDelete
  6. এদের অনেক নামই দেওয়া যায়। বারবার পড়লাম অভিষেক। দুর্দান্ত লেগেছে। দ্বিতীয়টা অসামান্য লাগায় তৃতীয়টা পরে পড়ব বলে রেখে দিচ্ছি।

    ReplyDelete
  7. আলাদারকমের । বেশ ভালো লাগল।

    ReplyDelete
  8. এক ব্যঙ্গ ও বহুবচন বিষণ্ণতা। কবিতার চিরাচরিত রীতিটি ভেঙে ফেলেছে।

    ReplyDelete
  9. রোদ উঠলে, সব শুকিয়ে যাবে মৃত্যু ভূমিকার কাঠ,
    Tao nam deoa jayni , ditio Lekhata khub valolaglo

    ReplyDelete
  10. এমন বিষণ্ণতা!,কিন্তু কী অদ্ভুদ সাবলীল!'এদের অনেক নামই দেওয়া যায়'

    ReplyDelete
  11. তিনটিই দুর্দান্ত হয়েছে।এর বেশি আর কী বলব?

    ReplyDelete
  12. প্রত্যেকটা কবিতা অনবদ্য .... প্রথম ২ টো বেশি ভালো লাগলো ..... তৃতীয়টা একটু অন্য ধরণের ...

    ReplyDelete